Ads Area

কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং চিকিৎসা বিদ্যা চর্চার বিকাশ

 কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং চিকিৎসা বিদ্যা চর্চার বিকাশ:-

কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং চিকিৎসা বিদ্যা চর্চার বিকাশ


গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের প্রতিষ্ঠা করেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ। আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই কলেজ আত্মপ্রকাশ করে। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল এই কলেজ থেকে সব অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জেন্ট হিসেবে যোগ্যতা অর্জনকারী ছাত্রদের সামরিক ও অসামরিক কেন্দ্রে নিয়োগ করা। কলেজের সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিয়োগ করা হয় মাউন্টফোর্ড জোসেফ ব্রামলিকে। ব্রামলির সময়কালেই মেডিকেল কলেজের এই পদটিকে অধ্যক্ষের পদে রূপান্তরিত করা হয়। দ্বারকানাথ ঠাকুর সহ দেশীয় অভিজাতদের অনেকেই এই প্রতিষ্ঠানে অর্থ দান করেন।
  প্রথমদিকে পাঠদানের মাধ্যম ইংরেজি থাকলেও পরে দেশীয় ভাষার ব্যবহার শুরু হয়। মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডক্টর হেনর হ্যারি গুডিব এর তত্ত্বাবধানে প্রথমে মধুসূদন গুপ্ত এবং পরে মধুসূদন সহ মেডিকেলের ছাত্র রাজকৃষ্ণ দে, উমাচরণ সেট, দারোকানাথ গুপ্ত এবং নবীন চন্দ্র মিত্র শব ব্যবচ্ছেদ করেন। তাদের এই উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে পাশ্চাত্য চিকিৎসা বিদ্যা চর্চার বিকাশ শুরু হয়। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কলকাতার মেডিকেল কলেজ থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্র পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যা চর্চায় পারদর্শী হয়ে ওঠে। মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ২০টি শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয় (১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দ), যার সঙ্গে ছিল একটি বহির্বিভাগ। এর দুই বছর পরে মেডিকেল কলেজের প্রাঙ্গণে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরি করা হয়। সুপারিনটেনডেন্ট ব্রামলির পরিকল্পনা ছিল মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মধ্যে মেধাবীদের ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে আরো উচ্চমানের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু অকাল মৃত্যুর জন্য তিনি সেই পরিকল্পনা রূপায়ণ করে যেতে পারেননি। পরবর্তীকালে মেডিকেল কলেজের কর্মসূচির ফ্রেডরিক জন মৌয়েটকে শিক্ষক গুডিব, ব্রামলির এই পরিকল্পনার কথা জানান। মৌয়েট এই পরিকল্পনার রূপায়নের কাজে হাত দেন। এস এস বেন্টিংক নামে জাহাজে মেডিকেল ছাত্রদের একটি দলকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্যে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয় (৮ মার্চ, ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দ)। চারজনের এই দলে ছিলেন ভোলানাথ বসু, গোপালচন্দ্র শীল, দারোকানাথ বসু এবং সূর্যকুমার চক্রবর্তী। এরা ছিলেন প্রথম বিলেত ফেরত বাঙালি ডাক্তার। ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অফ সার্জেন এর পাঠক্রম অনুসারে মেডিকেল কলেজের পাঠক্রম পুনর্নির্বাচিত ও সংস্কার করা হয়। মেডিকেল কলেজ রয়েল কলেজ অফ সার্জেন এবং ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন এর স্বীকৃতি পায়।

Post a Comment

0 Comments

Ads Area